কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজ আরও ৬ মাসের জন্য পেছাচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটিই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত সুড়ঙ্গ পথ।
বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বহুল আলোচিত ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গত মাসে কর্ণফুলীর তলদেশে বহু লেন টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নির্মাণ কাজ দেরিতে শুরু হওয়া ও ঠিকাদারদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক বিলম্বের জন্য অতিরিক্ত ৬ মাস সময় চান।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়ার ২ বছর পর এর কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।
হারুনুর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’
গত অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ কাজ শেষে হয়েছে।
সময় মতো নির্মাণ কাজ শেষ হলেও, ঠিকাদারদের টাকা দেওয়াসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানান হারুনুর রশীদ।
টানেলের নির্মাণ কাজের দায়িত্বে আছে চায়না কমিউনিকেশন কন্সট্রাকশান কোম্পানি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রকল্পের সময় বাড়ানোর অনুরোধসহ চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এ বিষয়ে ইআরডি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। কেননা, সময় বাড়ানোর বিষয়ে চীনের এক্সিম ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। এই প্রতিষ্ঠানটি সহজ শর্তের ঋণের মাধ্যমে প্রকল্পের ৫৭ শতাংশ খরচের জোগান দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর জন্য সময় লাগবে।’
২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসেন। সে সময় ২ দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের জন্য চীন ২৭টি প্রকল্পের অর্থায়ন করতে রাজি হয়। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল অন্যতম।
চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে। বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে।