বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মুজিববর্ষ ও মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও মহান বিজয়ের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অথচ বিএনপি নেতারা আজ এ বিষয় নিয়েও নেতিবাচক কথাবার্তা বলছেন।
তিনি বলেন, ৭৫’এর ১৫ আগস্টের পর স্বাধীনতার ইতিহাসকে বারবার বিকৃতি করা হয়েছে। ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পর বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জানতেন স্বাধীনতার জন্য জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া বিপ্লব সম্ভব নয়। ম্যান্ডেট পাওয়ার জন্য সত্তরের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানের ১৯ মিনিটের ভাষণে তিনি বাঙালিকে জাগিয়ে তুলেছেন। এটি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ। এ সকল ভাষণের ঊর্ধ্বে ছিল। কারণ আর কোনো নেতার এ ধরণের ভাষণের মধ্য দিয়ে কোনো রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়নি।
হানিফ বলেন, কোনো মেজরের হুইসেলে, গোলটেবিল আলোচনায় কিংবা কারো দয়ায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়নি। আমরা যুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ স্বাধীন করেছি। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬ সালের ছয় দফার ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছিল। বাঙালির মুক্তির পথ তৈরি হয়েছিল। স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতার ২১ বছরের আন্দোলনের পথ মসৃণ ছিল না। ১৩ বছর কারাবরণ করেছেন। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ভয়-ভীতি দেখিয়েও দমাতে পারেনি। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে দমিয়ে দিতে চেয়েছে কিন্তু বাঙালি জেগে উঠেছিল বলে তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন, আত্মমর্যাদাশীল সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
হানিফ আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে পাকিস্তানী ভাবধারার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন। দালাল আইন বাতিল করে রাজাকারদের মুক্ত করেছেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহানি হওয়া ২ লাখ মা-বোনের সম্মান পদদলিত করেছেন। জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করেন। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচার বন্ধ করে পাকিস্তানী ভাবধারার দেশ গড়তে চেয়েছিলেন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। আইইবি প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। ইঞ্জিনিয়ার রনক আহসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইবি সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন আইইবি ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নুরুজ্জামান, আইইবি ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন ও অর্থ) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মনজুর মোর্শেদ প্রমুখ।