ইউনিভার্স ট্রিবিউন অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:০১ | আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:০২
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, সুইডেনের আশা করা উচিত নয় যে, ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে তুরস্ক তাকে সমর্থন দেবে। সম্প্রতি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অবস্থিত তুরস্কের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ ও পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। কিন্তু স্টোকহোমের সাম্প্রতিক মুসলিম বিদ্বেষী ওই বিক্ষোভ সামরিক জোটটিতে সুইডেনের সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।
তুরস্ক যেহেতু আগে থেকেই ন্যাটোর সদস্য, সেহেতু এটি অন্য দেশকে এ সামরিক জোটে যোগদানে বাধা দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। এরই মধ্যে দেশটি সুইডেনের কাছে বেশ কিছু দাবি পেশ করেছে, যার মধ্যে কিছু কুর্দিদের প্রত্যর্পণের বিষয়ও রয়েছে।
সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে এরদোয়ান বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য সুইডেন যেন আমাদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার আশা না করে। পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি, যারা আমাদের দূতাবাসের সামনে ওই ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারে, তারা আমাদের কাছ থেকে বিন্দুমাত্র সহায়তা পাবে না।
তিনি আরও বলেন, যদি তুরস্ক ও মুসলিমদের প্রতি সুইডেন কোনো সম্মান না দেখায়, তাহলে ন্যাটোসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে আমরা তাদের সহায়তা করবো না।
বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়ার সুইডিশ সরকারের সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য দাবি করে এরদোয়ান বলেন, কোনো ধর্মকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। আর আমরা সবসময় সততার সঙ্গে কথা বলি। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যখন কেউ আমাদের অসম্মান করবে, তখন আমরাও তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গা করে রাখবো।
এদিকে, তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর জানিয়েছেন, সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাল জনসনের সফর বাতিল করতে বলেছে তুরস্ক। আগামী সপ্তাহেই আঙ্কারায় সফর করতে চেয়েছিলেন জনসন। তার এ সফরের বিষয়টি আশা জাগিয়েছিল যে, সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি কমাতে পারে তুরস্ক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি উলটো আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) পবিত্র কোরআন পোড়ানোর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে স্টোকহোমের তুরস্ক দূতাবাসের সামনে এরদোয়ানের কুশপুত্তলিকা পোড়ান সুইডেনের কিছু কুর্দি বিক্ষোভকারী। পরে উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের বিতর্কিত নেতা রাসমুস পালুদান পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ইসলাম ধর্ম ও সুইডেনের অভিবাসন ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে গালিগালাজপূর্ণ বক্তব্য দেন পালুদান। এসময় প্রায় ১০০ জন সমর্থক তার পাশে ছিলেন।
জানা যায়, দূতাবাসের সামনে কোনো ধরনের বিক্ষোভ আয়োজন করতে না দেওয়ার জন্য সুইডেনের কাছে আগে থেকেই একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। কিন্তু সে অনুরোধ রাখতে ব্যর্থ হয় সুইডেন। যদিও পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সুইডেন সরকার।
সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোবিয়াস বিলসস্ট্রোম বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তবে আমরা ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কিন্তু শনিবার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে সুইডেন সরকার ও আমি কোনোভাবেই সমর্থন করি না।