২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুরের জাজিরাপ্রান্তের নাওডোবায় ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ৩ বছর পর বৃহস্পতিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়াপ্রান্তে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার সেতুই দৃশ্যমান হয়। এখন চলবে সেতুর প্রথমতলার রেলওয়ে ও স্ল্যাব এবং দ্বিতীয়তলায় রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ।
মোটরসাইকেলযোগে বরিশাল থেকে সজিব হোসেন বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন শরীয়তপুরের জাজিরায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে। সেনাবাহিনীর বাধার কারণে সেতুর কাছে যেতে পারেননি। তাই দুঃখ নিয়ে আবার চলে যাচ্ছেন।
ঢাকা থেকে এসেছেন অনার্স পড়ুয়া কেএম রেদোয়ান আহমেদ। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে শুনছি স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কথা। গতকাল শুনলাম সব স্প্যান বসানো হয়েছে। তাই আর বসে থাকতে পারলাম না; আজই দেখতে চলে আসলাম।
চকবাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, গতকাল ৪১তম স্প্যান বসানোর পর আজ শুক্রবার পুরো পরিবার নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে চলে আসি; কিন্তু সেনাবাহিনীর লোকজন ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাই পদ্মাপাড়ের হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে চলে যাব।
আওয়ামী লীগ নেতা মোসলেম মাদবর বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো হয়। এরপর ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখার জন্য শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার পদ্মাপাড়ে সাধারণ লোকজন আসছেন। তাদের মধ্যে আনন্দ দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের মধ্যেও খুশির বন্যা বইছে।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আমরা বাপ-দাদার জমিজমা ভিটামাটি পদ্মা সেতুতে দেয়ার পর যখন খবর পাই যে, পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো হয়েছে; তখন আমাদের মনে আর দুঃখ নেই। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের আসতে দেখা যায় এবং তাদের আনন্দ-উল্লাস করতে দেখা যায়।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফুজ্জামাল ভুইয়া বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবন-জীবিকা বদলে যাবে। পদ্মাপাড়ের মানুষের অনেক আবেগ ও ভালোবাসা জড়িয়ে আছে এ সেতুতে। তাই সেতুটি পুরো দৃশ্যমান হওয়ায় পদ্মাপাড়ে মানুষ ও দর্শনার্থীদের ভিড়।