করোনো ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় আগামীকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) থেকে কানাডার গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ অন্টারিওতে ফের শুরু হতে যাচ্ছে লডাউন। সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ার ফলে হাসপাতাল, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ব্যাপক ভাবে চাপ পড়ছে। বিশেষ করে দেশের প্রধান চার প্রদেশ অন্টারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেকে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। ইতিমধ্যে কোনো প্রদেশের সিটি ‘ডেঞ্জার জোন’ এবং ‘হাই এলার্ট’ ঘোষণা করা হয়েছে।
কানাডায় আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪ হাজার ৬১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার। ইতোমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজার ৭১১ জন। মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৪০৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৬৯ জন।
কানাডার প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: তেরেসা ট্যাম কানাডিয়ানদের সতর্ক করে বলেছেন, কানাডায় যে অনুপাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিনের গননার তুলনায় তা দ্বিগুণেরও বেশি।
নতুন লকডাউন মোতাবেক, কোনও ব্যক্তি বাড়ির বাইরের কারও সাথে ইনডোরে একসাথে একত্রিত হতে পারবে না। যেসব ব্যক্তি একা থাকেন তাদের অন্য একটি পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকতে পারে। আউটডোর সমাবেশগুলি ১০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রেস্তোঁরাগুলি থেকে খাবার নেওয়া, ড্রাইভের মাধ্যমে এবং সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। ধর্মীয় সেবা, জানাজা এবং বিবাহ গৃহের ভিতরে ১০ জন বা বাইরে ১০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। জিম বন্ধ থাকবে। নন-অপরিহার্য খুচরা দোকান এবং মলগুলি কেবল কার্বসাইড পিকআপ বা সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
ব্যক্তিগত কেয়ার সার্ভিস, ক্যাসিনো এবং বিঙ্গো হলগুলি বন্ধ থাকবে। পোস্ট-সেকেন্ডারি সংস্থাগুলি ভার্চুয়ালি চালু থাকবে। তবে ক্লিনিকাল প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম থাকবে। ফার্মেসী, ডাক্তার এবং ডেন্টিস্ট অফিস, মুদির দোকান, প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি খোলা থাকবে। স্কুলগুলিও খোলা থাকবে। জনস্বাস্থ্য বিধি অমান্যকারীর ৭৫০ ডলার জরিমানা হবে।
এদিকে টরন্টোর মতো ম্যানিটোবায় এন্টি মাস্ক আন্দোলনকারীরা শারীরিক দূরত্ব ও মাস্ক পরার নিয়ম অমান্য করে ম্যানিটোবায় প্রাদেশিক সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শতাধিক মানুষ। এ সময় বিক্ষোভকারীরা অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে বলে জানা গেছে। আরসিএমপি সমাবেশে যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়েছে।
কানাডায় প্রথম করোনা হানা দেয় প্রধানমন্ত্রি জাস্টিন ট্রুডর ঘরে অর্থাত প্রথম আক্রান্ত হন ফার্স্ট লেডি সোফি। আর করোনায় প্রথম মারা যায় গত ৮ মার্চ, ভ্যাংকুভারে। তবে সুখবর, দেশটির এক মাত্র প্রদেশ নোনাভাটে করোনার কোনো প্রভাব নেই।
এদিকে, করোনার ফ্লো শর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে কানাডিয়ানদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। অপর দিকে কানাডা বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে আবিস্কৃতব্য করোনা ভ্যাকসিন অগ্রিম ক্রয় করছে ৪০০ মিলিয়ন ডোজ।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাসটিন ট্রুডো বলেছেন, প্রথম ধাপেই আবিস্কৃত করোনা ভ্যাকসিন আনা হবে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে।