Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
দেশের দুই বৃহৎ দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এই দুই দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কাকতালীয়ভাবে তাদের দুইজনের ছোট দুই ভাই দেশের দুইটি পৌরসভার সফল মেয়র।
দুইজনের নামের মধ্যেও রয়েছে মিল। একজনের নামের শুরুতে মির্জা, আরেকজনের শেষে মির্জা।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত মেয়র।
আর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোটভাই মির্জা ফয়সল আমিন প্রথমবারের মতো ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচিত হন।
মেয়র আবদুল কাদের মির্জা: বসুরহাট পৌরসভার তিন তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আসন্ন বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনেও মেয়র পদে অধিষ্ঠিত থেকে তিনি পুনরায় দলীয় মনোনয়নে চতুর্থবারের মতো মেয়র পদে প্রার্থী।
১৯৯৮ সালে তিনি প্রথমবার বসুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই মেয়াদে তিনি তৃতীয়বার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৫৯ সালে ১ ডিসেম্বর বসুরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের (সাবেক সিরাজপুর ইউনিয়ন) বড় রাজাপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল কাদের মির্জা। তার পিতা মরহুম মাস্টার মোশারফ হোসেন মশু মিয়া অত্র এলাকার নামকরা গুণী শিক্ষক এবং নিখুঁত মানুষ গড়ার কারিগর ছিলেন। মা ফজিলতের নেছা একজন গৃহিণী ছিলেন।
মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বড়ভাই ওবায়দুল কাদের দুই মেয়াদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। মেজো ভাই ফজলুল কাদের মিন্টু পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষকতার পেশায় দীর্ঘদিন একই কর্মস্থল বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। ছোটভাই শাহাদাত হোসেন ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতি নিয়ে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। মেয়র মির্জার ৬ বোনের সবাই নিজ নিজ অবস্থানে অত্যন্ত সম্মানের সহিত পরিবার-পরিজন নিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত।
আবদুল কাদের মির্জা বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন ছাত্রলীগের কোষাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করা থেকে তার রাজনীতির হাতেখড়ি শুরু। পরে তিনি নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ সালে সরকারি মুজিব কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে ভিপি নির্বাচিত হন। সরকারি মুজিব কলেজ থেকে স্নাতক পাস করার পর পুরোদমে রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন।
বর্তমানে তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও ‘পলিসি মেকার’ এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জৈতুন নাহার কাদের মহিলা কলেজসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন।
রাজনীতি ও পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন ছাড়াও আবদুল কাদের মির্জা অসংখ্য ক্রীড়া, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বেসরকারি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছেন। কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের আজীবন সদস্য তিনি। অবসর সময়ে বই, পত্র-পত্রিকা পড়া, গান শোনা, টিভি দেখে সময় কাটান তিনি। তার স্ত্রী আকতার জাহান বকুল একজন গৃহিণী। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
মির্জা ফয়সাল আমিন: স্বাধীনতার পর থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে মির্জা পরিবার বিভিন্নভাবে অবদান রেখে চলেছে। আর এ কারণেই এ পরিবারটি ঠাকুরগাঁওসহ আশপাশের জেলায় বেশ পরিচিত। রাজনৈতিক জীবনে মির্জা রুহুল আমিন (চোখা মিয়া) এরশাদ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রীও। তার ছেলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির কৃষি প্রতিমন্ত্রী পরে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এর আগে ১৯৭৪ সালে সাবেক মন্ত্রী মির্জা রুহুল আমিন, ১৯৮৮ সালে মির্জা রুহুল আমিনের বড় ছেলে বর্তমানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ২০১৬ সালে মির্জা রুহুল আমিনের ছোট ছেলে মির্জা ফয়সল আমিন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।
পারিবারিক সূত্র থেকে জানা গেছে, মির্জা রুহুল আমিন ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় ১৯৭৪ সাল থেকে কয়েকবার পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান থাকাকালীন তাকে পৌরসভার উন্নয়নের কাণ্ডারি খেতাব দিয়েছিলেন পৌরবাসী। পরে তিনি বিএনপি আমলে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এরপর মির্জা রুহুল আমিনের বড় ছেলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৯৮৮ সালে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে প্রথমে ঠাকুরগাঁও পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বর্তমান ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্রকে পরাজিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমপি নির্বাচিত হন। এখন তিনি বিএনপির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এবার ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় মির্জা পরিবারের ছোট ছেলেও পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাই সাধারণ মানুষ মনে করছেন বিগত আমলে মির্জা পরিবার ঠাকুরগাঁওয়ের উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন নবনির্বাচিত মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন।
সুত্রঃ যুগান্তর
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
আরও খবর
আরও
- আল-রাজী কমপ্লেক্স (জি-৪০১-৩ ), ১৬৬-১৬৭, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মরণি, বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ
- ফোন : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০১-২
- ফ্যাক্স : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০৩
- ই-মেল : info.universetribune@gmail.com
- প্রকাশকঃ মোহাম্মদ আনারুল ইসলাম
- কপিরাইট
- ২০১৯-২০২০ ইউনিভার্স মিডিয়া লিমিটেড
- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত