Facebook
Twitter
Youtube
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল পৌঁছে গেল লালকেল্লায়। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এক বিক্ষোভরত কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চলাকালীন ট্র্যাক্টরটি উল্টে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।
রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের দিন সকাল থেকেই উত্তাল নয়াদিল্লি। সকালে যে রাজধানীর রাস্তায় তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজের ছবি দেখা গেল, বেলা গড়াতেই তা বদলে গেল অশান্তি, হিংসার জেরে। লালকেল্লায় দেখা গেল কৃষক-বিক্ষোভের নজিরবিহীন ছবি। প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে কৃষকদের বিক্ষোভে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল রাজধানী।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল পৌঁছে গেল লালকেল্লায়। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এক বিক্ষোভরত কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চলাকালীন ট্র্যাক্টরটি উল্টে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে ঢোকার মুখে তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ। এমনকি গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, ট্র্যাক্টরটিতে সেই গুলি এসে লাগে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্র্যাক্টরটি। তার নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই কৃষকের। এর আগে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার যে জায়গায় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা তোলেন, প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে সেই খুঁটিতে চড়ে কৃষক সংগঠনের ঝান্ডা লাগিয়ে দেন হরিয়ানা-পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা বিক্ষোভকারী কৃষকেরা। কুয়াশা কাটতে না কাটতেই দিল্লি ঢেকে যায় কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায়। কৃষকরা পাথর বৃষ্টি করেন। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশও।
সারা দেশের নজর ছিল সিংঘু, গাজিপুর, নাঙ্গলোইয়ের দিকে। মোদি সরকারের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সেখানে তখন ট্র্যাক্টর মিছিল শুরুর তোড়জোড় করছেন কৃষকরা। ঠিক ছিল, মঙ্গলবার বেলা বারোটা নাগাদ কৃষকদের মিছিল তিনটি রুটে গিয়ে আবার ফিরে আসবে। শুধু ট্র্যাক্টরই নয়, আন্দোলনকারীদের অনেকে ছিলেন ঘোড়ার পিঠে। দিল্লি পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীদের আউটার রিং রোডে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু, তারা নির্ধারিত রুট ভেঙে আউটার রিং রোড দিয়ে দিল্লিতে ঢুকে পড়ে। একের পর এক জায়গায় তৈরি হয় রণক্ষেত্র পরিস্থিতি। দিল্লির ITO এলাকায় পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি ছিল আরও অগ্নিগর্ভ। সেখানে JCB দিয়ে কয়েকটি ব্যারিকেড উপড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। গাজিপুরের কাছে ব্যারিকেডের পাশাপাশি বাস দাঁড় করিয়ে রাস্তা কর্ডন করে পুলিশ। কিন্তু, তাতেও কৃষকদের আটকানো যায়নি। তারা ট্র্যাক্টর দিয়ে সেই বাসের গায়ে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। বাসের কাচও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অক্ষরধাম এলাকায় পুলিশকে ওভারব্রিজ থেকে আন্দোলনকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে দেখা যায়। এর মধ্যে আন্দোলনকারী কৃষকদের একটা বিশাল দল পৌঁছে যায় লালকেল্লায়। কিন্তু নয়ডা, ITO মোড়, SBT-র দিক থেকে আসা ট্র্যাক্টর মিছিল সটান লালকেল্লার দিকে ধেয়ে যায়। আইন না ফেরালে ফেরত যাব না বলে কঠোর মনোভাব দেখান কৃষকরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের তখন কার্যত কোনও অস্তিত্বই নেই লালকেল্লা চত্ত্বরে। এই সুযোগে কৃষক সংগঠনের ঝান্ডা হাতে নিয়ে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা লাগানোর খুঁটি বেয়ে উঠে পড়েন এক বিক্ষোভকারী। কৃষক সংগঠনের পতাকা লাগিয়ে দেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ সেখানে পৌঁছোয়। কৃষকদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরানো হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই দলে দলে কৃষক ফের জড়ো হন গাজিপুরে। সেখানে পরিস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন রাস্তায় নেমে পড়েছেন হাজার হাজার কৃষক। আর তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। কখনও আন্দোলনকারীদের দিক থেকে উড়ে আসছে ইট-পাথর। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়তে ছুড়তে এগোচ্ছে পুলিশ। নাঙ্গলোইতে আবার আন্দোলনকারীদের ট্র্যাক্টরে লাঠি চালায় পুলিশ। অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায়। রাস্তায় তখন একদিকে হাজার হাজার আন্দোলনকারী কৃষক এবং অন্যদিকে পুলিশবাহিনী। অশান্তির আশঙ্কায় বাস দিয়ে কর্ডন করে ইন্ডিয়া গেট যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিলশাদ গার্ডেল, ঝিলমিল, মান সরোবর পার্ক, জামা মসজিদ মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিংঘু, টিকরি, গাজিপুর, মুবারকা চক, নাঙ্গলোইতে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু করে ধরপাকড় শুরু হবে। বিকেলেই এনিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাসভবনে জরুরি বৈঠকে বসেন মন্ত্রকের আধিকারিকরা।
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
আরও খবর
- আল-রাজী কমপ্লেক্স (জি-৪০১-৩ ), ১৬৬-১৬৭, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মরণি, বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ
- ফোন : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০১-২
- ফ্যাক্স : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০৩
- ই-মেল : info.universetribune@gmail.com
- প্রকাশকঃ মোহাম্মদ আনারুল ইসলাম
- কপিরাইট
- ২০১৯-২০২০ ইউনিভার্স মিডিয়া লিমিটেড
- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত কপিরাইট