ইউনিভার্স ট্রিবিউন অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৩, ১০:১৬ | আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩, ১০:১৬
চলতি মাসেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গা-মাওয়া ৪২ কিলোমিটার অংশে চলাচল করবে ট্রেন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মূল সেতুর সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রেল স্ল্যাব ট্রাক বসানোর কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।
মূল সেতুর অগ্রগতি ৮৮ ভাগ। আর ভাঙ্গা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশের ওপরে। মূল সেতুতে অবশিষ্ট মুভমেন্ট জয়েন্ট আর ৭৫০ মিটার স্ল্যাব ট্রাকের কাজ চলছে জোরেশোরে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সিনিয়র প্রকৌশলী জহুরুল হক। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার অংশ ছাড়া ভাঙ্গা-মাওয়া ৪২ কিলোমিটার অংশের রেলপথের কাজ শেষ। চলতি মাসে মূল সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে।
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রাককারে মূল সেতুর রেলের ট্রাক প্যানেল (লোহার পাত) আর মালামাল নেওয়া হচ্ছে। বিশাল আকৃতির ট্রাক প্যানেলবোঝাই ট্রাককারটি ভায়াডাক্ট পেরিয়ে মূল সেতুতে চলছে পাথরবিহীন রেললাইনের ওপর দিয়ে। সেখানে ভায়াডাক্ট ও মূল সেতুর রেল কাজের প্রকৌশলীরাও আছেন। সেতুর রেললাইন নির্মাণে চলছে শত শত শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ।
ক্রেনের সাহায্যে রেলের ট্রাক প্যানেল বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত স্থানে। এরপর ধীরে ধীরে বসিয়ে দেওয়া হয় সেতুর ওপর। যন্ত্রের সাহায্যে তা নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেন প্রকৌশলীরা। এরপর প্যানেলের ওপর ঢালাইয়ের আগের আনুষঙ্গিক কাজ সেরে নেয় শ্রমিকরা। এভাবে একের পর এক ট্রাক প্যানেল ওয়ার্ক শপ থেকে নিয়ে মূল সেতুতে তৈরি করা হচ্ছে পাথরবিহীন রেলের ট্রাক স্ল্যাব।
এরই মধ্যে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ। বাকি ৭৫০ মিটার রেলপথের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। পুরো সেতুজুড়ে আটটি ব্রিজ মুভমেন্ট জয়েন্টের মধ্যে সাতটির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি একটির কাজ চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই শেষ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিক প্রকৌশলীরা।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের পরিদর্শক সঞ্জয় চন্দ্র রায় বলেন, পদ্মা সেতুতে আটটি ব্রিজ জয়েন্ট মুভমেন্ট রয়েছে। যার সাতটি শেষ। এখন শেষ জয়েন্ট মুভমেন্টের কাজ শেষ করে এ মাসেই রেল চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
পাথরবিহীন রেলপথ বাংলাদেশে এই প্রথম। খরচ বেশি হলেও টেকসই এ রেলপথের ভবিষ্যৎ মেরামত ব্যয় তেমন নেই বলে জানালেন প্রকৌশলীরা।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সহকারী প্রকৌশলী লোকমান হোসাইন বলেন, পাথরবিহীন এ রেলপথ তৈরিতে খরচ বেশি হলেও এটি হবে টেকসই। এ রেলপথে কোনো ঝাঁকুনি হবে না। পরবর্তী সময়ে মেরামত ব্যয় নেই বললেই চলে।
প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-যশোর ১৬৯ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে কাজ করছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ।