Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আজ সকালে নৌ বাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে।
আগ্রহী ১,৬৪৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী গতকাল সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। সেখানে নৌবাহিনীর হেফাজতে ছিলেন তারা।
আজ সকালে নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ শরণার্থীদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। দুপুরের মধ্যে জাহাজগুলোর ভাসানচরে পৌঁছে যাওয়ার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছে যে, ভাসান চরে স্থানান্তর করা হবে এমন অন্তত ১২টি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন তারা। যাদের নাম তালিকায় রয়েছে। কিন্তু তারা স্বেচ্ছায় স্থানান্তর হতে চান না বলে মানবাধিকার সংস্থাটিকে জানিয়েছেন। এই তালিকায় থাকা কিছু শরণার্থী জোর করে স্থানান্তরিত হওয়ার ভয়ে পালিয়েছেন বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি।
তবে বাংলাদেশ সরকার বলছে যে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য তাদের কোনোরকম জোর করা বা ভয়ভীতি দেখানো হয়নি, তারা স্বেচ্ছায় সেখানে যাচ্ছেন।
নৌবাহিনীর জাহাজে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলেন ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মোহাম্মদ মাসুম মোল্লা। তিনি জানান রোহিঙ্গাদের বহণকারী অন্তত সাতটি জাহাজের সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার একাধিক নৌযান যাত্রায় রয়েছে।
তিনি বলেন, “সাতটা জাহাজে রোহিঙ্গাদের নেয়া হয়েছে। এই জাহাজগুলোর সাথে অন্তত আটটি নৌযানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাত্রা করছেন। আর রোহিঙ্গাদের মালামাল বহণকারী দু’টি জাহাজ গতকালই ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।”
এই দফায় ভাসানচরে যাত্রা করা রোহিঙ্গাদের সবাই নিজেদের ইচ্ছায় কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে স্থানান্তরের আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন কক্সবাজারের একটি শরণার্থী ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা।
তবে বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রকাশিত এক খবরে বলা হচ্ছে যে এই রোহিঙ্গাদের মধ্যে অন্তত কয়েকজনকে ভয় দেখিয়ে এবং শারীরিক নির্যাতন করে ভাসানচরে যাওয়ার জন্য রাজি করানো হয়েছে।
ভাসানচরে যাওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর পরিবারের সদস্যের – যারা কক্সবাজারে ক্যাম্পে রয়েছেন – তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ঐ খবর প্রকাশ করে এএফপি।
তবে এই অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রায় ৬ মাস আগে সাগরে ভাসমান ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধারের পর ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল নৌবাহিনীর তত্বাবধানে।
কয়েকমাস আগে সেসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য বিক্ষোভ করে।
সেপ্টেম্বর মাসে ভাসানচরে বসবাসরত কয়েকজন রোহিঙ্গার বরাত দিয়ে লন্ডন-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে যে সেখানে রোহিঙ্গা নারীদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।
সেসময় এই বিষয়ে ভাসানচরে নৌবাহিনীর প্রকল্পের পরিচালক কমোডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন যে ভাসানচরে যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদের বেশ যত্নসহকারে রাখা হয়েছে।
ভাসানচরে যেভাবে থাকবে রোহিঙ্গারা
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে সেখানে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসেই এই প্রকল্প গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পটির বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
চরে এক লক্ষ রোহিঙ্গা থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের জন্য ১২০টি ক্লাস্টার বা গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ঘর রয়েছে ১,৪৪০টি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যাতে ব্যবহার করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে ভাসানচরে পাঁচ তলা বিশিষ্ট ১২০টি শেল্টার হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে।
জোয়ার এবং জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে ভাসানচরকে রক্ষার জন্য চারপাশে নয় ফুট উচ্চতার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
আরও খবর






আরও






ইউনিভার্স ট্রিবিউন
- আল-রাজী কমপ্লেক্স (জি-৪০১-৩ ), ১৬৬-১৬৭, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মরণি, বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ
- ফোন : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০১-২
- ফ্যাক্স : +৮৮ ০২ ৫৫১১১৫০৩
- ই-মেল : info.universetribune@gmail.com
- কপিরাইট
- ২০১৯-২০২০ ইউনিভার্স মিডিয়া লিমিটেড
- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত